বাংলা রচনা : খাদ্যে ভেজাল ও তার প্রতিকার - by Composition

বাংলা রচনা : খাদ্যে ভেজাল ও তার প্রতিকার - by Composition

খাদ্যে ভেজাল তার প্রতিকার রচনা



[সংকেত: ভূমিকা , ভেজাল কী, ভেজালের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি চালচিত্র, ভেজালের কারণ, ভেজালের পদ্ধতি, দুর্নীতি ভেজালের চিত্র, খাদ্যে ভেজাল রোধে বর্তমান অভিযান , উপসংহার ]


ভূমিকা

মানুষ সামাজিক জীব। মানুষের কল্যাণেই সমাজ। সমাজের মঙ্গলেই মানুষ সমাজের ভালো-মন্দ মানুষের ভালোমন্দের ইচ্ছার ওপরই নির্ভর করে। মানবতাবোধ মানুষের বড় গুণ। এই গুণের অধিকারী হয়েই মানুষ এত বড় প্রাণিজগতে মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের কারণ, সে পরহিতে জীবন দান করে

অথচ, অর্থলোলুপ লালসার ফল মানবজাতির জন্যে যে কত বড় ভয়াবহ হতে পারে তা খাদ্যে ভেজালের পরিণাম দেখলেই উপলব্ধি করা যায় যে খাদ্য গ্রহণ করে মানুষ জীবনধারণ করে তাতে নির্দ্বিায় ভেজাল মিশ্রণ করে মানুষের সর্বনাশ সাধন করা জঘন্যতম অপরাধের কাজ

 

ভেজাল কী ?

সাধারণত ভেজাল বলতে বুঝায় খাদ্যে নিম্নমানের, ক্ষতিকর, অকেজো অপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মেশানো। প্রকৃতিগত গুণগত নির্ধারিত মানসম্মত না হলে যে কোনো খাদ্যদ্রব্যই ভেজালযুক্ত বিবেচিত হতে পারে খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল সংবাদটি আজ আর নতুন নয় প্রায় প্রতিদিনই নিয়ে জাতীয় দৈনিকগুলোতে ছাপা হচ্ছে বিভিন্ন সংবাদ

সম্প্রীতি দৈনিক ইত্তেফাকে জনস্বাস্থ্য প্রজন্ম হুমকির মুখে ঢাকায় ৭০ শতাংশ, দেশে ৫০ শতাংশ খাদ্যদ্রব্য ভেজাল শীর্ষক একটি সংবাদ নিশ্চয়ই আপনাদের দৃষ্টি এড়ায় নি। সংবাদের প্রধান বক্তব্য ছিল যে বাংলাদেশ বিশেষ করে রাজধানীয় ঢাকায় ভেজালমুক্ত বিশুদ্ধ খাদ্য অনেকটা সোনার হরিণের মতো দুর্লভ। মাছ, মাংস, চিনি, লবণ, চাল, আটা, দুধ, ঘি, মিষ্টি, ওষুধ- ভেজাল সর্বত্রই

এমনকি মিনারেল ওয়াটার নামে বোতলবন্দি বিশুদ্ধ পানিতেও ভেজাল সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে -সব নকল ভেজাল খাদ্য সামগ্রীই বিশুদ্ধ বা খাঁটিয়ে লেবেল লাগিয়ে অনায়াসে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এরূপ খাঁটি ঘি, খাঁটি মধু, ঘাঁটি তেলের প্রচার সরবরাহের অভাব নেই

আসলে -সব খাঁটি লেবেলের আড়ালে আসল জিনিসটাই বোধ হয় হারিয়ে গেছে। নকল-ভেজালের দৌরাত্ম্যে খাঁটি কথাটাই কথার কথায় পরিণত হয়েছে সকলেই জানে খাঁটি মোটেও খাঁটি নয়

 

ভেজালের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি চালচিত্র

 বর্তমান দেশের ভেজারে দৌরাত্ম্যের কথা আমরা সবাই কমবেশি জানি। কিন্তু ভয়ের কথা যে ভেজালের আওতার মধ্যে প্রতিনিয়তই নিত্যনতুন আইটেম যুক্ত হচ্ছে বস্তুত নিত্য নতুন প্রক্রিয়া উপাদান বা পদার্থ ব্যবহার করে যেভাবে খাদ্যদ্রব্য ভেজাল করা হচ্ছে তা নির্ণয় করার ব্যবস্থা উদ্যোগ না থাকায় প্রকৃত ভেজালের পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে না।

আমরা প্রতিনিয়ত বাজার থেকে কিনে যেসব খাদ্যদ্রব্য খেয়ে থাকি, এদের মধ্যে কত শতাংশ ভেজাল তা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল তবে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের এক সূত্র থেকে জানা যায় রাজধানীতে বিক্রিত খাদ্যসামগ্রীর শতকরা সত্তর ভাগ ভেজালযুক্ত। অন্যদিকে ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ-এর সূত্র মতে, দেশের পঞ্চাশ শতাংশ খাদ্যদ্রব্যই ভেজাল মিশ্রিত করে বিক্রি করা হয়

তারা একটি পরিসংখ্যান করে দেখিয়েছে যে, ১৯১৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত বাইশ হাজার সাতশত উনিশটি খাদ্যদ্রব্য বিশ্লেষণ পরীক্ষা করে দেখেছে যে, সব খাদ্যদ্রব্যের প্রায় পঞ্চাশ (৪৯.২২%) শতাংশ ভেজাল এদিকে কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর হিসেবেও বাজারে বিক্রয় হচ্ছে এমন খাদ্য দ্রব্যের পঞ্চাশ শতাংশ ভেজাল

ভেজালের কারণ

মানুষ কেন খাদ্যে ভেজাল দেয় তার কারণ পর্যালোচনা করলে মানুষের লোভী মনোবৃত্তির পরিচয় মেলে। অর্থের লালসা মানুষের চিরন্তন জীবনের সাথে অর্থ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে, সমাজজীবনে স্বাভাবিকভাবে চলতে গেলে, তথা বাঁচতে গেলে অর্থের প্রয়োজনীয়তার কথা অস্বীকার করার কোনো উপায়ে নেই

আর এই অর্থ উপার্জনের জন্যে মানুষের প্রাণান্ত চেষ্টা কিন্তু অর্থের প্রয়োজন থাকলেও তা যে কোনো উপায়ে অর্জন করা চলে না, অর্থোপার্জনের ন্যায়-অন্যায় পথ রয়েছে। সৎপথে জীবিকার্জনের কথা অভিপ্রেত হলেও ঘরে-বাইরে সর্বত্রই আজ মনুষ্যত্বের দীনতার চিত্র। একদিকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-কলহ, অপরদিকে অর্থনৈতিক দুর্দশা, ফলে সমাজের সর্বত্রই মনুষ্যত্বের দীনতার চিত্র।

দ্ন্দ্ব-কলহ, অপরদিকে অর্থনৈতিক দুর্দশা, ফলে সমাজের সর্বত্রই আজ নানা ভেজালে ছেয়ে গেছে। আমরা প্রতিদিন অবাক বিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করি, সমাজে সমাজ-বিরোধীর যে সম্মান, যে প্রতিপত্তি সেখানে একজন জ্ঞানী, সৎ মানুষের মূল্য তুচ্ছ। সততা সেখানে লাঞ্ছিত, অসহায় বিবেক সেখানে বিবর্জিত

আজ মানুষ আর সৎপথের কথা বা সততার কথা চিন্তা করে না যে কোনো উপায়ে হোক তার চাই টাকা সে টাকা কালো পথে আসুক কিংবা সাদা পথে আসুক কিংবা কারো রক্ত ঝরিয়ে লাল পথে আসুক তা ভাববার কারো অবকাশ নেই টাকা হলেই হলো এর পরিণতিতে আজ সমাজের উচ্চ স্তর থেকে শুরু করে নিম্ন স্তর পর্যন্ত ভেজালের ছোঁয়া লেগেছে

ফলে ক্রমেই মানুষগুলোও ভেজালে রূপান্তরিত হয়েছে। এখন মানুষ তার নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য-দ্রব্যকেও ভেজালে রূপান্তরের নিন্দনীয় প্রচেষ্টায় লিপ্ত আমাদের সমাজে কে আসল আর কে ভেজাল তা চেনারও কোনো উপায় নেই। ভেজাল পণ্যের মতোই সে সামাজিক চাকচিক্যের মোড়কে আবৃত থাকে ফলে ভেজাল এখন আমাদের দেশে একটি জাতীয় সমস্যায় রূপান্তরিত হয়েছে।

 

ভেজালের পদ্ধতি

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কোনো জিনিসটিতে ভেজাল নেই তা বের করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার আর এই ভেজাল দেয়ার রয়েছে বিচিত্র সব পদ্ধতি। ভেজাল দেওয়ার প্রক্রিয়ায় খাদ্যশস্যে বহির্জাত পদার্থ সরাসরি যোগ করা হয়, যেমন : ওজন বৃদ্ধির জন্য বালি বা কাঁকর, ভালো শস্যের সঙ্গে কীটপতঙ্গ আক্রান্ত বা বিনষ্ট শস্য মেশানো ইত্যাদি

অনেক সময় মজুদ খাদ্যশস্যের ওজন বাড়ানোর জন্য কেউ কেউ তাতে পানি ছিটায় ঘি-এর সঙ্গে পশুচর্বি দিয়ে ভেজাল করা হয়। তিল বা নারিকেল তেলের সঙ্গে বাদাম তেল বা তুলাবীজের তেলা মেশানো হয়। সরিষার সঙ্গে প্রায়ই শিয়ালকাটার বীজ একত্রে মিশিয়ে তেল বের করা হয় সয়াবিন তেলের সঙ্গে পামতেলের ভেজাল করা হয়।

অনেক সময় দুধের মাখন তুলে নিয়ে অথবা দুধে পানি মিশিয়ে ভেজাল দুধ বাজারজাত করা হয়। আবার মহিষের দুধ পানি দিয়ে পাতলা করে সহজেই চালানো যায় গুঁড়াদুধে ময়দা, সুজি অন্যান্য দ্রব্য মেশানো খুবই সহজ। ব্যবহৃত চা পাতা, কাঠের গুঁড়া শুকনা পাতার গুঁড়া দিয়ে চা- য়ে ভেজাল দেয়া হয়

মসলার মধ্যে লঙ্কা বা হলুদ গুঁড়াতে সীসাজাতীয় পদার্থ মিশিয়ে রঙের উজ্জ্বলতা বাড়ানো হয় কোমল পানীয় তৈরিতে তরল গ্লুকোজ বা চিনির সিরাপের পরিবর্তে প্রায়শ ব্যবহৃত কার্বোক্সি মিথাইল সেলুলোজ মেশানো হয় বিভিন্ন ফলের রসের নামে কৃত্রিম নিষিদ্ধ দ্রব্য ব্যবহারে করে নকল রস তৈরি হয়ে থাকে

অধুনা মিনারেল ওয়াটার নামে বাজারে যে পানির ব্যবসা চলছে তাতে গুণ মানের নিশ্চয়তা অতি সামান্য বা অনেক ক্ষেত্রে নেই বললেই চলে দুঃখজনক হলেও সত্য যে ভেজাল নিরূপণের জন্যে যে বিএসটিআই প্রতিষ্ঠান রয়েছে, রয়েছে দুর্নীতি দমন ব্যুরো সেখানেও ভেজাল আর দর্নীতিতে ছেয়ে গেছে ফলে আজকের দিনে ভেজাল থেকে মুক্তি পাওয়া সত্যিই কঠিন ব্যাপার

 

দুর্নীতি ভেজালের চিত্র

আজকের ব্যবসায় স্বার্থবুদ্ধি বড় অভাব নীতিবোধের শিশুর খাদ্য মুহূর্তের মধ্যে উধাও হয়ে যায় রোগীর ওষুধে ভেজাল খাদ্যে ভেজাল ভেজাল খাদ্য খেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে মানুষ পঙ্গু হয়ে যায় সারা জীবনের জন্য পৃথিবীতে বাংলাদেশের মতো আর কোনো দেশে খাদ্যে এত ভেজাল মেশানো হয় না ।

এক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্থান বোধ হয় শীর্ষে এখানে সিমেন্টের সঙ্গে মাটি মেশানো হয়। শিশুর দুধে নির্বিকার চিত্তে নোংরা জল মেলাতে পারে এদেশের গোয়ালারাই সম্প্রতি গুঁড়ো দুধে ধরা পড়েছে রাসায়নিক ক্ষতিকারক পদার্থ। ওষুধে ভেজাল মেশাতে হাত কাঁপে না এখানকার মুনাফাখোরদের।

চালে কাঁকর, ডালে কাঁকর মশলাপাতিতে ভেজাল শাক-সবজিতে, আলু ইত্যাদিতে রং করা হয় সুকৌশলে জীবনধারণের অপরিহার্য সব পণ্য সরিয়ে দিয়ে কৃত্রিম অভাব তৈরি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এভাবেই বেড়ে চলে ব্যক্তিগত মুনাফার অঙ্ক

আজকাল ডিমের মধ্যে ভেজাল ঢুকেছে। মাছকে তাজা দেখানোর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে রং। আর মাছকে তাজা রাখার জন্য অবাধে ব্যবহৃত হচ্ছে ফরমালিন অথচ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যদি সামান্যতম পরিমাণের ফরমালিনও কোনোপ্রকারে মানুষের পেটে যায়, তবে তা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

আজকাল শাক-সবজি ফলমূলে যে হারে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহৃত হচ্ছে তাও মানবদেহের জন্য মারাত্মক শুটকি মাছে মারাত্মক কীটনাশক ব্যবহারের কথা তো আমরা সবাই জানি অর্থাৎ বাজার হতে ভেজালবিহীন খাদ্যদ্রব্য পাওয়াই মুশকিল মুড়ি যে মুড়ি, সে-মুড়িতেও ব্যবহৃত হচ্ছে ইউরিয়া সার গরুর মাংসের সঙ্গে মহিষের মাংস এবং খাসীর মাংসের সঙ্গে গরু, মহিষ বা ভেড়ার মাংসের ভেজাল দেয়ার মতো অপকর্মও চলছে দেদারছে

বিভিন্ন হোটেল, চাইনিজ রেস্তোরাঁ ফাস্টফুডের দোকানগুলোতেও ভেজাল খাদ্যের কোনো কমতি নেই একশ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী আমাদের দেশের নকল ভারতীয় নিম্নমানের ওষুধ প্রকাশ্যে বিপণন করছে। অনেকেই সেসব ওষুধ কিনে প্রতারিত হচ্ছে।

ভেজাল নকল ওষুধ ব্যবহার করে অনেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগছে আবার উত্তীর্ণ ওষুধ গ্রহণ করে কেউ কেউ মৃত্যুর মুখোমুখি মোদ্দাকথা, মানুষ বাজার থেকে যা কিছু কিনে খাচ্ছে তার কোনোটি যে ভেজাল আর কোনোটি যে আসল তা বোঝা দায় অথচ বিশুদ্ধ ভেজালমুক্ত খাদ্যদ্রব্য পাওয়ার অধিকার মানুষের আছে

 

খাদ্যে ভেজাল রোধে বর্তমান অভিযান

স্বাধীনতার পর আমাদের প্রত্যাশা ছিল, আমরা ইংরেজ আমলে হারানো মূল্যবোধ, ধর্মবোধ আর নীতিবোধকে আবার ফিরে পাবো। ফিরে পাবো বিধ্বস্ত সততা। কিন্তু দেশভাগের ফলে অর্থনৈতিক বিপর্যয় আরও তীব্র হলো সংকট এল মূল্যবোধে সমাজদ্রোহীরা দিনে দিনে পুষ্ট হয়েছে। 

ঘৃণ্য ব্যবসায়ীর এখানে কঠোর শাস্তি হয় না দুর্নীতি দমনের জন্য গঠিত হয়েছে টাস্ক ফোর্স কিন্তু তাও ভেজালের ছোয়ায় আক্রান্ত হয়েছে বস্তুত আইন দিয়ে কখনও মানুষের হৃদয়ের পরিবর্তন করা যায় না বিবেকবোধকে পায়ে দলিত করেই তারা পার্থিব সুখের শিখরে ওঠে খুব কম মানুষই আছেন অসচেতনভাবে খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল দেয় তথা অন্যকে প্রতারণা করে

প্রায় সবক্ষেত্রেই জেনে-শুনে এবং সচেতনভাবেই এই গর্হিত সামাজিক এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে অগ্রহণযোগ্য নিন্দনীয় অপকর্মটি একশ্রেণির ব্যবসায়ী বিক্রেতা করে থাকেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাদেরকে ওয়াজ নসীহত করে বিরত রাখা যাবে না, শক্ত হাতে দমন করতে হবে

দেশের সংবিধানের ১৮() অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়ন জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন রাষ্ট্র অন্যতম প্রাথমিক কর্তব্য বলি গণ্য করিবে বাজার যেখানে ভেজাল নিম্নমানের খাদ্যদ্রব্যে পূর্ণ সেখানে জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়ন জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করতে হলেও রাষ্ট্রকে অবশ্যই সর্বাগ্রে ভেজাল নিম্নমানের খাদ্যদ্রব্য এবং এসবের যোগানদাতাদের বিরুদ্ধে খড়গহস্তে হতে হবে।

জনগণকেও ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশে বিশুদ্ধ খাদ্য বিল ২০০৫ নামে একটি আইন করা হয়েছে। আইনে সর্বোচ্চ লক্ষ টাকা জরিমানা এবং সর্বোচ্চ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ১১ জুলাই ২০০৫ বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ভেজাল অস্বাস্থ্যকর খাবার তৈরির জন্য হোটেল মালিককে সাজা প্রদান জরিমানা করেন।

 

উপসংহার

বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ গরিব মানুষ খাদ্যে পানীয়ে ওষুধ ভেজাল খেয়ে প্রতিনিয়ত ধুঁকছে। ভেজালের সর্বনাশা বিভীষিকা থেকে কি মানুষের মুক্তি নেই? মানুষের শুভবুদ্ধি কি এমনি করেই তমসাচ্ছন্ন থাকবে? কবে আর এদের বিরুদ্ধে গণরোষ দুর্বার হবে ?

ভেজাল এক সামাজিক অপরাধ। বর্তমানে ভেজাল একটি মারাত্মক ব্যাধি। সমগ্র জাতিকে ব্যাধি গ্রাস করতে বসেছে। অবস্থা চলতে থাকলে জাতির ভবিষ্যৎ অচিরেই তলিয়ে যাবে গভীর অন্ধকারে কাজেই যে কোনো মূলে ভেজালের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতে হবে

Next Post
No Comment
Add Comment
comment url